Black Hole: মহাবিশ্বের রহস্যময় দানব
ব্ল্যাক হোল কি? (What is a Black Hole?)
ব্ল্যাক হোল হলো মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু যার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতটাই বেশি যে, আলো পর্যন্ত তার আকর্ষণ এড়াতে পারে না। এটি সময়, স্থান এবং পদার্থের গঠনকে এমনভাবে বিকৃত করে যে বিজ্ঞানীরা একে সময়-স্থান (spacetime) এর "গর্ত" বলে আখ্যা দেন।
ব্ল্যাক হোল গঠিত হয় যখন একটি বিশাল নক্ষত্র নিজের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে তা নিজে নিজেই ধসে পড়ে—এই ধ্বংসই সৃষ্টি করে ব্ল্যাক হোল।
ইভেন্ট হরাইজন – যেখান থেকে ফেরত আসা যায় না
প্রতিটি ব্ল্যাক হোলের চারপাশে একটি সীমান্ত থাকে, যাকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন (Event Horizon)। এটি এমন একটি বিন্দু, যার ভেতরে গেলে আলো সহ কোনো কিছুই আর ফিরে আসতে পারে না।
ব্ল্যাক হোল কিভাবে আবিষ্কৃত হলো?
ব্ল্যাক হোলের তত্ত্ব প্রথম প্রস্তাব করেন বিজ্ঞানী John Michell এবং পরে Albert Einstein এর আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের মাধ্যমে এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায়।
২০১৯ সালে Event Horizon Telescope (EHT) প্রথমবারের মতো একটি ব্ল্যাক হোলের সরাসরি ছবি প্রকাশ করে। এটি ছিল Messier 87 গ্যালাক্সির কেন্দ্রের একটি ব্ল্যাক হোল।
Sources:
ব্ল্যাক হোল কিভাবে কাজ করে?
ব্ল্যাক হোলের মূল শক্তি এর মাধ্যাকর্ষণ. এটি আশেপাশের বস্তু ও আলো নিজের দিকে টেনে নেয়। যখন কোনো বস্তু ইভেন্ট হরাইজন অতিক্রম করে, সেটি অসীম ঘনত্বে সংকুচিত হয় যাকে বলে সিঙ্গুলারিটি (Singularity)।
ব্ল্যাক হোলের প্রকারভেদ
- Stellar Black Hole: একটি বড় নক্ষত্র ধসে পড়ে তৈরি হয়।
- Supermassive Black Hole: কোটি কোটি সূর্যের ভরের হয়। গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকে।
- Intermediate Black Hole: মাঝারি ভরের ব্ল্যাক হোল।
- Primordial Black Hole: মহাবিশ্বের শুরুতে তৈরি হয় বলে ধারণা।
ব্ল্যাক হোল কি আমাদের জন্য বিপদজনক?
ব্ল্যাক হোল যদিও বিপজ্জনক মনে হয়, কিন্তু এটি পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। আমাদের গ্যালাক্সির কেন্দ্রস্থলে যে ব্ল্যাক হোল আছে (Sagittarius A*), তা পৃথিবী থেকে প্রায় ২৬,০০০ আলোকবর্ষ দূরে।
বিজ্ঞানীদের জন্য ব্ল্যাক হোল কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ব্ল্যাক হোল হচ্ছে এমন একটি বিষয় যা আপেক্ষিকতা ও কোয়ান্টাম মেকানিক্স উভয়ের মধ্যকার যোগসূত্র স্থাপন করতে পারে। এটি মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও গঠনের ব্যাখ্যা দিতে সহায়ক হতে পারে।
উপসংহার
ব্ল্যাক হোল আজো আমাদের জন্য এক গভীর রহস্য। তবে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরা ধীরে ধীরে এর প্রকৃতি বুঝতে পারছি। একদিন হয়তো ব্ল্যাক হোল আমাদের মহাবিশ্বের জন্ম ও পরিণতির চাবিকাঠি হয়ে উঠবে।
আরও তথ্য: